জটেশ্বরকে পৃথক ব্লক ঘোষণার দাবিতে সরব স্থানীয় বাসিন্দারা

বিধানসভা নির্বাচনের আগে আলিপুরদুয়ার জেলায় জোরালো হচ্ছে পৃথক ব্লকের দাবি। বাসিন্দাদের দাবিকে সমর্থন জানাচ্ছে বিরোধী সব রাজনৈতিক দল। ভেবে দেখার কথা জানাচ্ছে শাসক দল।

 

Bengal Live আলিপুরদুয়ারঃ জেলায় জোরালো হচ্ছে নতুন ব্লক গঠনের দাবি। ভোটের আগে রাজনৈতিক চাপানউতোর জটেশ্বরে।
ভোট যতই এগিয়ে আসছে, রাজনীতির পারদ ততই চড়ছে, সেইসাথে পাল্লা দিয়ে তীব্র হচ্ছে জনসাধারণের দাবি পূরণের আন্দোলন। এবার বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠল, জটেশ্বর ১ ও ২; ধনিরামপুর ১ ও ২, দলগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে জটেশ্বরকে ব্লক ঘোষণা করার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফালাকাটা ব্লক সদরে চিকিৎসা কিংবা প্রশাসনিক কাজে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাদের সমস্যায় পড়তে হয়। ধনিরামপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত‍্যন্ত এলাকা থেকে ফালাকাটা ব্লক সদরের দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। এদিকে জটেশ্বর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত‍্যন্ত এলাকা কড়াইবাড়ি সহ বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে ফালাকাটা ব্লক সদরের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। ফলে ব্লক সদরের বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে গিয়ে নানান কারণে সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের দাবি, জটেশ্বর ব্লক সদর হওয়ার মতো যথেষ্ট পরিকাঠামো আছে। কলেজ, একাধিক প্রাথমিক স্কুল, হাইস্কুল, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে শুরু করে পুলিশ আউট পোস্ট, বাজার, মার্কেট কমপ্লেক্স ও পঞ্চায়েত অফিস সহ নানা পরিকাঠামো আছে। কিন্তু সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নিতে ছুটতে হচ্ছে সুদূর ফালাকাটা ব্লক অফিসে। প্রায় ৩৫-৪০ কিলোমিটার যেতে আসতেই দিন কাবার হয়ে যাচ্ছে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, জটেশ্বর পৃথক ব্লক হলে উপকৃত হবেন এলাকার হাজার হাজারো মানুষ।

এদিন জটেশ্বর বাজার এলাকার বাসিন্দা দেবজ্যোতি হোড় বলেন,”জটেশ্বরে স্কুল কলেজ, বাজার, জন সংখ্যা সমস্ত কিছুই পর্যাপ্ত রয়েছে। কিন্তু প্রত‍্যন্ত এলাকার বহু মানুষ বর্তমানে ব্লক সদরে গিয়ে কাজকর্ম করতে সমস্যায় পড়ছেন। সেদিক থেকে জটেশ্বরকে ব্লক ঘোষণা করা হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।

বিজেপির ১৩ নং মন্ডল সভাপতি অঘোরনাথ রায় বলেন,” জটেশ্বরকে ব্লক ঘোষণা করার দাবি আমরা অনেক আগেই তুলেছিলাম। এখনো সেই দাবি রয়েছে।” এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা কংগ্রেস নেতা মৃন্ময় সরকার বলেন, “জটেশ্বরকে ব্লক করার দাবি দীর্ঘ দিনের, এলাকার মানুষ চায় জটেশ্বরকে ব্লক করা হোক। কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সময় আন্দোলন করা হয়েছে। তবে প্রশাসন এই বিষয়ে কোনো কর্নপাত করেনি। আগামী নির্বাচনী প্রচারে ফালাকাটাকে মহকুমা ও জটেশ্বরকে ব্লক করার দাবি জোরালো করে প্রচার করা হবে।”

আলিপুরদুয়ার জেলা সিপিএমের সম্পাদক মৃনাল রায় বলেন, “এই দাবি কে আমরা সমর্থন করি।” আলিপুরদুয়ার জেলা পি এস ইউ এর সম্পাদক সঞ্জীব বক্সী বলেন, “ফালাকাটাকে মহকুমা ও জটেশ্বরকে ব্লক ঘোষনার দাবিতে আমরা বহুদিন থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা বিডিও কে ডেপুটেশনও দিয়েছি। আমরা চাই ফালাকাটাকে মহকুমা ও জটেশ্বরকে অবিলম্বে ব্লক ঘোষনা করা হোক।”

আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “জটেশ্বরের মানুষ ব্লকের দাবি করতেই পারেন। তাতে কোন অন্যায় নেই। এব্যাপারে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। দীর্ঘদিন ফালাকাটার মানুষ পৌরসভার দাবি জানানোর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌরসভা দিয়েছেন। এবার জটেশ্বরের মানুষ ব্লকের দাবি করছে। দাবি করতেই পারে। তবে ব্লক করলে সাধারণ মানুষের কি সুবিধা হবে এবং ব্লকের প্রয়োজনীয়তা আছে কি না এই বিষয় গুলি প্রশাসন খতিয়ে দেখবে।”

Exit mobile version