বিজয়াতেই শেষ নয়, এই গ্রামে দুর্গাদশমীতে পুনরায় পূজিতা হন দেবীদুর্গা
প্রায় আড়াইশো বছরের রীতি মেনে দশমীর পরেও আরাধ্যা হন দেবী দুর্গা। এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি এই পুজোয় মেতে ওঠেন দুই দিনাজপুর সহ মালদার বাসিন্দারাও।
Bengal Live হেমতাবাদঃ উৎসব শেষে আপামর বাঙালির মধ্যে যখন মন খারাপের সুর ঠিক সেই সময়ই পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন হেমতাবাদ ব্লকের খাদিমপুর এলাকার বাসিন্দারা। প্রায় আড়াইশো বছরের রীতি রেওয়াজ মেনে দুর্গা দশমীর রাত থেকেই দেবী দুর্গা পুনরায় পূজিতা হন এই এলাকায়। পুজোয় মেতে ওঠেন এলাকার প্রায় তিনশো এর বেশী পরিবারের সদস্য সহ দুই দিনাজপুর ও মালদার বহু বাসিন্দা। দশমী থেকে শুরু হয়ে রবিবার পর্যন্ত চলবে এই পুজো।
পুজোর উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, প্রায় আড়াইশো বছর ধরে সংশ্লিষ্ট এলাকার তিনশো এর বেশি পরিবার একত্রিত হয়ে আয়োজন করেন এই পুজোর। প্রতিবছর নিজেরাই চাঁদা দিয়ে দশমীর রাত থেকে তিন দিন ধরে বলাইচন্ডী রূপে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন তারা। প্রাচীন প্রথা মেনে পুজোর তিন দিন আগে থেকে শেষ পর্যন্ত নিরামিষ খাবার খান এলাকাবাসী। জানা গিয়েছে, দুর্গা প্রতিমার দশটি হাত থাকলেও বলাইচন্ডী প্রতিমার হাতের সংখ্যা চারটি। এই প্রতিমার সঙ্গে থাকেনা অসুর ও মোষের মূর্তি। তবে দেবী দুর্গার মতো লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ সহযোগেই পুজো করা হয় দেবী বলাইচন্ডীকে। প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী দশমীর রাতে পুজো শুরু হওয়ার আগে সোনা ও রুপা মিলিয়ে ২০ ভরি ওজনের অলঙ্কারে সাজানো হয় প্রতিমাকে। পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দাদের মঙ্গল কামনায় পাঁঠা ও পায়রা বলিও দেওয়া হয় এই পুজোয়। প্রতিবছর এই পুজোয় দর্শনার্থী হিসেবে আসেন দুই দিনাজপুর ও মালদহ জেলার বহু মানুষ।
এবিষয়ে পুজোর উদ্যোক্তা রমেন বর্মণ ও গোপাল বর্মণ বলেন, দুর্গাপুজোর শেষে দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন হয়ে যাওয়ার পর এলাকার বাসিন্দাদের মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। বাসিন্দাদের বিষাদ কাটাতে ২৫৪ বছর আগে খাদিমপুরের বাসিন্দাদের একাংশ এই পুজো শুরু করেন। সেই থেকে এখনও সেই প্রাচীন রীতি মেনে দশমীর রাত থেকে তিনদিন ধরে আয়োজন করা হয় এই পুজোর।