গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সুস্থ না হতেই হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে রোগীকে। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের অ্যাম্বুলেন্স বৃদ্ধ রোগীকে রাস্তায় ফেলে পালিয়েছে।
Bengal Live রায়গঞ্জঃ পূর্ণ সুস্থ হওয়ার আগেই হাসপাতাল থেকে ছুটি হওয়া এক রোগীকে বাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে চলে গেল অ্যাম্বুলেন্স। মঙ্গলবার বিকেলে এমনই অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে ফেটে পড়লেন ওই রোগীর প্রতিবেশীরা। ঘটনা রায়গঞ্জের মাড়াইকুড়া অঞ্চলের শ্যামপুর মোড় এলাকায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনা তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার শ্যামপুর মোড় লাগোয়া জোড়া বটতলা এলাকার বাসিন্দা বাদল দাসকে অসুস্থ অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন প্রতিবেশীরা। এরপর এদিন বিকেলে মেডিক্যাল কলেজের এক অ্যাম্বুলেন্স ওই ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রত্যক্ষদর্শী জোৎস্না বিশ্বাসের অভিযোগ, ” আমি বাড়ির সামনে বসে ছিলাম। হঠাৎ একটা অ্যাম্বুলেন্স এসে রাস্তার পাশে থামে।ওই অ্যাম্বুলেন্স থেকে এক ব্যক্তিকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে রাস্তার পাশে রেখেই তারা প্রচন্ড গতিতে গাড়ি চালিয়ে পালিয়ে যায়। একটু কাছে গিয়ে বুঝতে পারি, আমাদের ওই প্রতিবেশীকে ফেলে রেখে যাওয়া হয়েছে। প্রচন্ড জ্বরে সে রাস্তায় শুয়েই কাঁপছিল। আমি বাড়ি থেকে একটা চাদর এনে তাঁকে দিই।”
রায়গঞ্জ ব্লকের ১০ নম্বর মাড়াইকুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা কল্পনা বর্মন জানিয়েছেন, ” ওই বৃদ্ধের নাম বাদল দাস। বাড়ি শ্যামপুর মোড় লাগোয়া জোড়া বটতলা এলাকায়। তাঁর স্ত্রী লকডাউনের আগেই বাইরে গিয়ে কোথাও আটকে পড়েছেন। কয়েকদিন ধরে ওই বৃদ্ধ জ্বর নিয়ে বাড়িতে পড়ে ছিলেন। আমরা সেই খবর পাওয়ার পরে বিডিও’র সাহায্যে তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা করি। গতকালও আমি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়েছি। আমাকে জানানো হয়েছে, ওই বক্তি সুস্থ হলে আমাদের খবর দেওয়া হবে। এদিন সন্ধ্যার ঠিক আগে মেডিক্যাল কলেজ থেকে তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এনে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়। আমরা গোটা ঘটনা স্বাস্থ্য দপ্তরে অভিযোগ করেছি।”
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার অভীক মাইতি জানিয়েছেন, ” ওই ব্যক্তি জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর তাঁর ট্রুন্যাট মেশিনে টেস্ট করা হয়। রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপর এদিন তাঁকে চিকিৎসারত ডাক্তার ছুটি দেন। তাঁর ভর্তির সময় লেখানো ফোন নম্বরে আমরা যোগাযোগ করে জানতে পারি সেটি ঠিক দেওয়া হয়নি। ফলে একজন অ্যাটেন্ডডেন্টকে সাথে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে রাস্তায় ফেলে দেবার বিষয়টি জানি না।গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”