সাউন্ড ব্যবসায়ী থেকে হয়েছেন পাপড়ি চাট বিক্রেতা। করোনা আবহে অনটন এড়াতে বেছে নিতে হয়েছে বিকল্প পেশা ।
Bengal Live রায়গঞ্জঃ তাঁর সাউন্ড বক্স কিংবা ডিজের আওয়াজে কিছুদিন আগেও গমগম করতো বিভিন্ন আসর অনুষ্ঠান। এখন তিনিই সাইকেলে করে শহরের মোড়ে মোড়ে বিক্রি করছেন সুস্বাদু চাট-ঘুগনি। তবে ভোলেননি পুরোনো সাথীকেও, সাইকেলে লাগিয়ে নিয়েছেন ছোট্ট সাউন্ড সিস্টেম ।
রায়গঞ্জের দেবীনগর এলাকার বাসিন্দা অখিল দাস। এতকাল এলাকায় একজন সাউন্ড ব্যবসায়ী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন অখিল। কিন্তু করোনা আবহে পেশা হারিয়ে অনটন এড়াতে বিকল্প পেশা বেছে নিতে হয়েছে তাঁকে। করোনার কারণে প্রায় দীর্ঘ প্রায় দেড়’বছর যাবৎ সেরকম কোনো বরাত মেলেনি উৎসব অনুষ্ঠানের। ফলে সংসার চালাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়েছে তাকে। এমতাবস্থায় স্ত্রী দীপ্তি দাসের সহযোগিতা ও সম্মতিতে অখিল বাবু সিদ্ধান্ত নেন ঝাল মুড়ি, ঘুগনি, পাপড়ি চাট বিক্রি করার। আর এখন তাতেই দিন গুজরান করছেন তাঁরা ।
জলে ডুবে মৃত্যু হলো দুই শিশুর, শোকের ছায়া রায়গঞ্জের টেনহরি গ্রামে
অখিল বাবু নিজের মতো করে সাজিয়ে নিয়েছেন তাঁর ছোট্ট পসরা। সাইকেলের উপর কাঠের তক্তা পেতে তাতে ছোট একটি গ্যাস সিলিন্ডার এবং সাউন্ড সিস্টেম লাগিয়ে দিব্যি বানিয়ে ফেলেছেন পাপড়ি চাটের দোকান। কয়েকদিনের মধ্যেই রায়গঞ্জের গোয়ালপাড়া, দোস্তি মোড়, দেবীনগর, কসবা এলাকায় পাপড়ি চাট বিক্রেতা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। তবে তিনি একা নন, এই উদ্যোগের সমান অংশীদার তাঁর স্ত্রী দীপ্তি দেবীও।
তিনি বলেন, অনুষ্ঠান বাড়িতে মাইক, সাউন্ড বক্স, ডিজে প্রভৃতি ভাড়া দিয়ে আমাদের সংসার চলত। কিন্তু করোনা আসার পর থেকে নানা নিষেধাজ্ঞায় সে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে করোনার সময় থেকেই আমাদের সংসারে তীব্র অভাব-অনটন শুরু দেখা দেয়। প্রায় দেড় বছর যাবত এভাবেই দিন কাটছিল আমাদের। শেষে একপ্রকার বাধ্য হয়ে বিকল্প পেশা বেছে নিতে হয় আমার স্বামীকে। আমরা পাপড়ি চাটের দোকান করার কথা চিন্তা করি। আর তারপর থেকে দোকানের যাবতীয় খাবার জিনিসপত্র তৈরি করে দিই আমি। আর সেসব আমার স্বামী সাইকেলে করে বিক্রি করে। এভাবেই যা উপার্জন হয় তাতেই এখন সংসার চলে আমাদের ।
অপরদিকে অখিল বাবু বলেন, মাথার উপর কিছু ঋণের বোঝা ছিল তার উপর করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আর্থিক অনটনে একেবারে জর্জরিত হয়ে পড়ি। তাই স্ত্রীর সহযোগিতায় এই বিকল্প ব্যবসা শুরু করেছি। তবে পুরোনো ভালবাসাকে ছাড়তে পারেননি একেবারে অখিল বাবু। সাইকেলে লাগিয়ে নিয়েছেন ছোট্ট সাউন্ড সিস্টেম। তাঁর সুসজ্জিত দোকানে গান শুনতে শুনতেই এখন পাপড়ি চাটে খান ক্রেতারা।