সাঁঝরঙের ইশতেহার
Nblive পোর্টজিনঃ
মিত্রাবসু
১ ঘন্টা লেট। স্টেশনদরজার প্রায় মুখোমুখি নিভু নিভু আলোর কাটাকুটি, কীভাবে যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে গাছের ফাঁক-ফোকর দিয়ে। তারই অন্যপাশে দাঁড়িয়ে আছে নীল সালোয়ার… লেডিস ব্যাগ… ঘড়ির দিকে ঘন ঘন তাকিয়ে দেখার কায়দাটাই বাতলে দিচ্ছে- অপেক্ষারা অভিমানী হয়।
উল্টোদিকের চপ-সিঙাড়া ফুরিয়ে যাচ্ছে নিমেষে। কেউ কেউ দাঁড়িয়ে আছে অকারণ। কেউ আবার পুজোর শপিং। ঘড়ির কাঁটাও ক্লান্তপ্রায়। এগোচ্ছে না কিছুতেই। যেভাবে ভিড় ট্রেনে অন্ধ বাউলের কন্ঠে ভেসে আসে গান, ঠিক ততখানি মগ্ন হয়েই দাঁড়িয়ে আছে অভিমান।
সাজুগুজু পনিটেল, চা-ইইই গরম, মুড়ি মুড়ি…, লাগেজ সহ পরিবার…আরো কত কী! পিচ রাস্তায় আলোর রেখা মিলিয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে।
কত কত সম্পর্কের নতজানু ইতিহাস এভাবেই স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে রোজ। ব্যস্ত শহর… পুরুষতান্ত্রিক অভ্যাসগুলি… আড়চোখে মেপে নেয় কলেজ পেরোনো নীল সালোয়ার। ডাকনাম বৃষ্টি।
ফার্স্ট ফ্লোর কলেজ করিডোরে বিপ্লব ডেকেছিল ওকে- “বৃষ্টি… এই, তোকে না একবার তুমি বলে ডাকবো।” আজকের তারিখেই। ফার্স্ট ইয়ার তখন।
আজ পাঁচ পেরোবে ওদের।
রাস্তার বাঁদিক ঘেঁসে একটা সরু বিকেল ফুরিয়ে যাবে একটুপর। ক্লান্তিদোষে রোদ বুজে আসবে শহরের। অফিস থেকে বাড়ি ফিরবে ফর্মাল শার্ট… টিউশন পৌঁছে দেবে সাইকেলরিক্সা।
সদ্য পাঁচ পেরোনো কলেজ করিডোরের দিব্যি, বৃষ্টি যাবে না কোথাও। অপেক্ষারা অভিমানী হয়। হোক। তবু সে জানে। বোঝে-
বিপ্লব আসবেই।