যে নেশা আত্মা খায়

 যে নেশা আত্মা খায়

                  তানিয়া চক্রবর্তী

Nblive পোর্টজিন ঃ

আঁধার খেলো গা, গায়ে লাগে আঁধার। ছিলাম নেশায়,উচ্চকিত এক ভ্রম ভেঙ্গে সকালে উঠে দেখি জলকণা আর শিউলি সংসারের আকাশ থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে, আমিও লুটেয়ি পড়েছি আত্মা

চমকে উঠছে শিউলি, আমি তার বৃন্ত থেকে পৃথিবীর লালিত্য নিজের গায়ে লাগিয়ে ফেলেছি, এ এক চুরির দায়!গায়ে গা লাগিয়ে বসেছে শুক আর সারি, আমাকে দেখে ওরা নিয়তি আনতে গেছে। যেখানে তৃপ্তি, তৃপ্তিকে বাঁচিয়ে রাখে সেখানে তো শক্তির খেলা শিখতে হয়!

এসো আমায় নাও, এসো কিছুতেই আমায় নিও না!মধ্যেখানে মারো আমায়, মধ্যেখানে মারব আমি তোমায়।কাঁদিয়ে কাঁদিয়ে ভাড়ের গায়ে জলের দাগ আঁকো!

যে আমায় খুব কাঁদিয়েছে সে আমার শত্রু , না না সে আসলে আমার আন্তিম এক অপার্থিব মিত্র, সে আমায় খড়িমাটির ভাষা দিল, আমি নগ্ন হওয়ার আগেই প্রকৃতি ও পুরুষ বুঝলাম। আর নেশাকে দেখলাম সে তরতর করে কানায় কানায় ভরিয়ে ফেলছে আমায়, আমি তার দেবী,আমি তার দাসী, সে আমার দেবত্র খুঁটে খায়। এই দেবত্র ও দাসত্বের মাঝে শরীর খসবে হাসতে হাসতে!

এই ঠোঁটে দেখো একতারার তার লেগে গেছে ,দু’দণ্ড বসো গোঁসাই। আমি তোমার সুর খুলে মধ্যরাতে খেলি। জানো শরীরে বৃষ্টি নামার আগে, আমি সমস্ত মেঘের গলা টিপে রক্তচন্দন লাগাই!এখানে ইচ্ছে মরে, ইচ্ছে বাঁচে, ইচ্ছে করে জন্মযোগে খেলি

এই যে পিরিত , এখানে তো অচিন পাখির বাসা, একে নিয়ে ভয় হয়, এই বাস্তব চিনতে ডর লাগে, তার চোখে আমি ফেট্টি দি , কপালে আদরের তিলক, গলায় পুঁতির মা্লা। সে যেন গাইতে পারে গোঁসাই। আমি তার ছাউনি ধরে ধরে মধ্যরাতে লিখেছি সে পংক্তিমালা, তুমি তখন চূর্ণীর সামনে বসে আমায় দেখতে।তোমার আমার ফারাক অনেক,তবু আমি তোমার ঠান্ডা গা মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেছি শাদ্দলে ঢাকা, আঃ কি চিকন সৎ প্রেমের ডাক তোমার গোঁসাই, সাদা গুচ্ছ দাড়ি, পৃথিবীর কেউ তোমার মতো ডাকেনা গোঁসাই। এখানে আমি গঙ্গাজল দেখেছি—
চূর্ণ করো আমায় চূর্ণী
চূর্ণ করো আমায়
আমার ঘরে জলের ভীষণ খেলা
আমি তাকে জাপটে জাপটে রাখি

আমাকে ধরতে এলে দেখবে নেই, আমাদের সবার ভেতরে একটা খুব বড় নেই আছে, ওই নেইটা আমাদের পরিচিতির অনেকটা অংশ জুড়ে আছে। এই নেই এর খাই আছে, এই নেই কে নিয়েই খেলা যায়, এই নেই কে নিয়ে পাগল হওয়া যায়। এই নেই থাকলে আপনি মুক্ত হতে পারেন, এই নেই আপনাকে ধ্বংস করতে পারে। এই নেই নিয়ে ঘুরলে পৃথিবীর মেরুদন্ড দেখা যায়, তারপর অজস্র মাতাল নদী আর তাদের নিঃসংশয় তীব্র সঙ্গমস্থল , ওখানে পৃথিবীর ললাটচুম্বিত হয়। ওখানে সাতটি রং রামধনুর কাছে এসে ভালবাসা শেখে । পৃথিবীর মাটিতে বাজে একতারা, দোতারা। আর নাচতে থাকে যোগিনীরা। এখানে তৃপ্তি অতৃপ্তিকে চড় মারে। আবার আদর করে, শাসনে আদরে সে নেশা আমুল বেড়ে যায়
ও লালিত্য তোমার ডাকে যে অচিনপাখি হাসে
এসো, পালিও না…

শক্তি রেখে দিলাম গর্ভমুণ্ডে, তুমি আসো ভ্রমর এখানে তোমার সজ্জা নিরুপিত হবে, ভালবাসা হবে ফুল ফুটবে —ফল পাবে কিনা জানি না!
ধ্বনি ধ্বনি উচ্চকিত ধ্বনি
এসো, প্রবেশ করো, জড়িয়ে দেখো
পাঁজর খুলে উপচে আসে শক্তি
শক্তি কেমন উথলানো সব ক্ষীর
আঁচ কমিয়ে ভেতর ভেতর বসাই
ওরা শক্তি হয়ে দেহের ভেতর জ্বলে

Exit mobile version