ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবে অ্যালোভেরা! জানুন এর ব্যবহার।
Bengal Live ডেস্কঃ অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর একটি প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন ভেষজ। সহজলভ্য এই ভেষজের রস ত্বকের প্রদাহ থেকে শুরু করে আরও অন্যান্য রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। এতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ফলিক অ্যাসিড, অ্যামিনো অ্যাসিড ও ভিটামিন-এ, বি৬ ও বি২ ইত্যাদি, যা স্বাস্থ্যরক্ষায় সহায়তা করে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক এই মহৌষধির গুনাগুন।
কার্যকারিতাঃ
হজমে সহায়কঃ
হজম শক্তি বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরার খুব উপকারী। এর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান পাকস্থলী ঠাণ্ডা রাখে এবং গ্যাসের সমস্যা দূর করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস জল বা গুড়ের শরবতের সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে খান। এতে আপনার হজমের সমস্যা দূর হবে।
ঘরোয়া মশলায় ঝটপট তৈরী বিরিয়ানি, রইল সহজ পদ্ধতি
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ
যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য অ্যালোভেরা ভীষণ উপকারী। অ্যালোভেরার রস রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে আনতে সহায়ক। তাই নিয়মিত অ্যালোভেরার রস আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
হার্টের সমস্যায়ঃ
অ্যালোভেরার রস কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক। এটি দূষিত রক্ত দেহ থেকে বের করে দেয়। যার ফলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে।
ওজন কমাতেঃ
ওজন কমানোর চেষ্টায় প্রচন্ড উৎসাহী আজকের প্রজন্ম। এই ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও অ্যালোভেরার রসের অবদান রয়েছে। অ্যালোভেরার রসে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান শরীরের জমে থাকা মেদ দূর করে। এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ওজন কমাতে সাহায্য করে।
পুদিনা পাতাঃ জানলে মহৌষধ, না জানলে আগাছা, জেনে নিন ১০ টি মহৎ গুণ
চুলের যত্নেঃ
অ্যালোভেরা জেল চুলের শুষ্ক ভাব দূর করার জন্য এক অসাধারণ উপাদান। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান চুল পড়া ও খুশকির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া অ্যালোভেরা রসের সঙ্গে আমলকীর রস মিশিয়ে চুলে লাগান। এতে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
ত্বকের যত্নেঃ
ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা জেল একটি ভীষণ পরিচিত ও প্রয়োজনীয় উপাদান। ত্বকের প্রদাহ, র্যাশ, চুলকানি, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে অ্যালোভেরার তুলনা হয় না। এই অ্যালোভেরা জেল ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ রাখে এবং বয়সের ছাপ মুছে দিতে সক্ষম।
এছাড়াও অ্যালোভেরার রস দাঁত এবং মাড়ির ব্যথা ও সংক্রমণ জাতীয় রোগ নিবারণে সহায়তা করে।
সতর্কতাঃ
সব উপাদানেরই কোনো না কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। চিকিৎসকদের মতে, অ্যালোভেরা জেল তখনই নিরাপদ যখন এটি ওষুধ বা জেল হিসেবে চামড়ায় প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালোভেরার মধ্যে থাকা হলদে রঙের ‘অ্যালো লেটেক্স’বের হয়। যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। যদি অ্যালোভেরার শাঁসের সঙ্গে এই ল্যাটেক্স মিশে যায় তবে এটি খাওয়া শরীরের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
সফল মা-বাবা হতে চান ? মাত্র এই কয়েকটি আচরণ করুন সন্তানের সঙ্গে
অ্যালো ল্যাটেক্স এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে পেট ব্যথা হতে পারে। আবার ল্যাটেক্স এর দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে ডায়রিয়া, রক্ত প্রস্রাব, পটাশিয়ামের স্বল্পতা, পেশী দুর্বলতা, ওজন হ্রাস এর মত রোগ দেখা দিতে পারে।
এই ল্যাটেক্সের ফলে কিডনি সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। উচ্চমাত্রায় ল্যাটেক্সের ব্যবহার কিডনি ফেইলিয়রের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
এছাড়াও এই অ্যালো ল্যাটেক্সের ফলে গর্ভবতীর গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে মায়ের বুকের দুধ সন্তানকে খাওয়ার মাধ্যমে মায়ের শরীর থেকে সন্তানের শরীরে প্রবেশ করতে পারে এই ল্যাটেক্স।
শিশুদের ক্ষেত্রেও ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে অজান্তে অ্যালো ল্যাটেক্স গ্ৰহন করলে শিশুর পেট ব্যথা ও ডায়রিয়ার সমস্যা হতে পারে।