ভাইফোঁটায় যম-যমুনার নাম কীভাবে যুক্ত হল জানেন ? জেনে নিন
পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র সম্পর্ক হল ভাই ও বোনের সম্পর্ক। যুগ যুগ ধরে ভাই ও বেনের সম্পর্ক অটুট রাখার জন্য ভাইফোঁটা উৎযাপিত হয়।
Bengal Live ডেস্কঃ বাংলা মতে কালী পূজার দুই দিন পর অর্থাৎ কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে এই অনুষ্ঠানটি পালিত হয়। বোনেরা শুধু ভাইদের ফোঁটা দেন এমনটা কিন্তু নয়, অনেক সময় বাড়ির মেয়েরা ছেলেদেরও ভাইফোঁটা দিয়ে থাকে৷ যেমন নাতনী দাদুকে বা দিদা নাতিদের।
এই অনুষ্ঠান শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে হয়ে থাকে। বিভিন্ন জাগায় এই উৎসবটির নাম বিভিন্ন। যেমন পশ্চিম ভারতে “ভাইদুজ”। মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে “ভাইবিজ”। পশ্চিমবঙ্গে “ভাইটিকা” ইত্যাদি।
তবে এই ভাই ফোঁটা এলো কী করে ? এ নিয়ে বিভিন্ন লোকের বিভিন্ন মত আছে। পুরাণেও এই বিভিন্নতা আছে। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দু-একটা ভাইফোঁটার গোড়ার গল্প।
প্রচলিত মতে, শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুর বধ করার পর তাঁর বোন সুভদ্রার সঙ্গে দেখা করতে যায়। সুভদ্রা তাঁর ভাই কৃষ্ণের কপালে আনুষ্ঠানিক ভাবে তিলক পরিয়ে দেন এবং সেই দিনটি বিশেষ করে তুলেছিলেন। সেখান থেকেই ভাইফোঁটার জন্ম হয়।
আবার একটি বিতর্ক মতবাদ এমন আছে যে, যম ও যমী ভাই-বোন। এই যমীই হলো যমুনা। তারা একসাথে বড় হয়ে ওঠেন। এবং তারা যৌবনে পদার্পন করেন। একসময় গিয়ে যমী তার ভাইয়ের কাছে সহবাসের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁর মতে তাঁর এই চাওয়াতে কোনো ভুল নেই। কারণ তারা পরস্পর মাতৃগর্ভে যমজ সন্তান হিসেবে একত্রবাস বা সহবাস করেছেন। যম তাঁর বোন যমুনা অর্থাৎ যমীর অনুরোধের উত্তরে বললেন, ভগিনী আমরা সহোদরা। এটা আমাদের জন্য পাপ। যমুনা বহুবার যমকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু যম কখনোই নিজের নিয়ন্ত্রণ হারাননি। একটা সময় যমের মৃত্যু হয়। মৃত ভাই যমের আয়ু ভিক্ষা চেয়ে যমী তার কপালে ফোঁটা দিয়েছিল। এই থেকেই চলে আসছে ভাইফোঁটা। ফোঁটা দিয়ে কামনা করা হয় ভাইয়ের মৃত্যু যেন না হয়, ভাই যেন দীর্ঘায়ু পায়।
(তথ্যঃ- ঋগ্বেদের ১০ ম মন্ডলের ১০ ম সূত্রে)
আরো বহু প্রচলিত ধারণা আছে যেমন লক্ষ্মী ও বলির কাহিনী ইত্যাদি। তবে বর্তমানে ভাইয়ের মঙ্গল চেয়ে ভাইফোঁটা দেওয়া হয়। যুগ যুগ ধরে এটি চলে আসছে আরো যুগ যুগ ধরে এটি চলতেই থাকবে।