রায়গঞ্জে এমএ পাশ মেয়ে বেঁচেন খিলি পান, শহরে আওয়াজ – প্রিয়াকে একটা চাকরি দিন
Nblive রায়গঞ্জঃ “রূপমকে একটা চাকরি দিন।” কবি সুবোধ সরকারের এই বিখ্যাত পঙক্তি বাতাসে ভেসে বেড়াত একসময়। বেকার যুবকদের বাস্তব ছবি উঠে এসেছিল কবির কলমে। ঠিক তেমনই রায়গঞ্জের বন্দর স্কুল রোডে গেলে শোনা যাবে “প্রিয়াকে একটা চাকরি দিন।” হ্যাঁ, প্রিয়া এম এ পাশ, সাথে ডিএড-ও। কিন্তু ভাগ্য দেবীর অপ্রসন্নতায় প্রতিবন্ধী এই মেয়েটি পেটের জ্বালায় পেন – কলমের বদলে তুলে নিয়েছে খিলি পান-চুন। যেখানে সমবয়সীরা চাকুরীরত বা চাকরির অন্বেষণে ব্যস্ত, সেখানে প্রতিবন্ধী এই মেয়েটির দিন গুজরান হচ্ছে পানের দোকানে।
সারাদিন রাস্তার ধারে দোকান করেই সামলাচ্ছেন অসুস্থ বাবার চিকিৎসা, সাথে ছোট বোনের পড়াশোনার খরচ জোগান। মনে একটাই খেদ, অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্নদের চাকরি হলেও ন্যূনতম প্রাথমিক স্কুলের চাকরিও জোটেনি তাঁর।বেকারত্বের জ্বালায় ভেঙ্গে না পরে নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বাঁধা টপকে এক অনন্য জীবনযুদ্ধের লড়াইয়ে নামার কাহিনীর ছবি ফুঁটে উঠেছে রায়গঞ্জ স্কুল রোডের প্রিয়ার জীবনে।
২০১৩ সালে ইংরেজি অনার্স নিয়ে স্নাতক হবার পর স্নাতকোত্তর করেছে প্রিয়া। প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরির জন্য ডিএড প্রশিক্ষণও নিয়েছেন প্রিয়া। পাশপাশি রয়েছে পঞ্চাশ শতাংশ প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট। সরকারি চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় সকল যোগ্যতা থাকার পরেও প্রিয়ার কপালে জোটেনি কিছুই। এদিকে অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছেন বাবা প্রশান্ত সাহা। তাঁর চিকিৎসার খরচ, ছোট বোনের বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশুনার খরচ যোগাতে হচ্ছে এই পানের দোকান করেই। বেকারত্বের জ্বালাকে হার মানিয়ে সকল প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে প্রিয়া নেমে পরেছেন পেটের ক্ষিদে মেটানোর জীবনযুদ্ধে।