তর্পণ, পিতৃপুরুষের প্রতি সম্মান, ভালবাসার উৎকৃষ্ট প্রমাণ।
Nblive ওয়েব ডেস্কঃ প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী মৃত্যুর পর পিতৃপুরুষরা বাস করেন প্রেতলোকে। বছরের একটি সময়ই তাঁরা মর্ত্যে আসেন কিছু পাওয়ার আশায়। জীবিতকালে তাঁরা সন্তানের জন্য যা কিছু রেখে যান, তা ভোগ করার সুযোগ পান না। কিন্তু তাঁরা আশা করেন, বছরের একটি দিন অন্তত সন্তানের সেবা তাঁরা পাবেন। তাঁরা যে অতীতকে ভুলে যায়নি, তাও উপলব্ধি করতে পারবেন। প্রেতলোক থেকে মর্ত্যলোকে এসে পিতৃপুরুষরা থাকেন কালীপুজো পর্যন্ত। এর মধ্যে সর্বসম্মতভাবে মহালয়ার দিনটিকেই তর্পণের দিন হিসেবে ধরে নেয়া হয়। কারণ, ওই দিন পিতৃপুরুষকে জলদান করাটাই শাস্ত্রসম্মত, এমনকি বিজ্ঞানসম্মতও। সাধারণ নিয়মে কেবল জলদান করলেই চলে। তবে যার সামর্থ্য আছে, সে চন্দন এবং তিল দিতে পারে। কেউ কেউ ভোজ্যও দিয়ে থাকে। যেমন, চাল, ডাল, কলা ইত্যাদি।
ধর্মরাজ যুধিষ্ঠির কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধশেষে তর্পণ করেছিলেন। শ্রীরামচন্দ্র বনবাসে যাওয়ার পথেও করেছিলেন তর্পণ। গঙ্গা হল পবিত্র। তাই সকলে চেষ্টা করেন গঙ্গায় গিয়ে তর্পণ করতে। তবে নিয়ম অনুযায়ী, বাড়িতেও তর্পণ করা যায়। অনেকে তো প্রত্যেকদিনই তর্পণ করে থাকে। এটা পিতৃপুরুষের প্রতি সম্মান, ভালবাসার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। আর, সেই ভালবাসা না পেলে পিতৃপুরুষ রীতিমত রুষ্ট হন। তারা যেমন সন্তানসন্ততির কাছ থেকে জল পেলে শান্তি পান, তৃপ্তি বোধ করেন, ঠিক তেমনই জল না পেলে অভিশম্পাত করতে করতে ফের প্রেতলোকে ফিরে যান। জলদান করা মানে যে কেবল আত্মশুদ্ধি তা নয়। এর মাধ্যমে পৃথিবীর সকলকে সেবাও করা হয়।