শহরের রাস্তায় গল্প কবিতা লিখে নতুন প্রজন্মকে সাহিত্যের দুনিয়ায় ফেরাতে উদ্যোগী শিক্ষক
ডিজিটাল যুগে ছাত্র-ছাত্রীদের গল্প কবিতার দুনিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন বালুরঘাটের শিক্ষক। প্রযুক্তির এই যুগে শহরের রাস্তায় লিখলেন স্বরচিত নানা গল্প ও কবিতা।
Bengal Live বালুরঘাটঃ নতুন প্রজন্মকে বাংলা সাহিত্যের কাছাকাছি আনতে অভিনব উদ্যোগ বালুরঘাটের শিক্ষক গগন বাবুর। ছাত্রছাত্রীদের কাছে বাংলা গল্প কবিতাকে পৌঁছে দিতে বই খাতা ছেড়ে এবার রাস্তা কে বেছে নিলেন তিনি। শহরের রাস্তায় চক সহযোগে লিখলেন স্বরচিত নানা গল্প ও কবিতা। প্রযুক্তির এই যুগে শিক্ষকের এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে শহরবাসীর।
করোনা আবহে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অনলাইনে পড়াশোনার যুগে বই খাতা রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গী হয়েছে মোবাইল ফোন। প্রযুক্তির উন্নতিতে মোবাইলেই গল্প কবিতা পড়ে ফেলায় কমছে বই পড়ার অভ্যাস। ফলে বিক্রি কমেছে বইয়ের দোকান গুলিতেও। তাই এই ডিজিটাল যুগে ছাত্র-ছাত্রীদের গল্প কবিতার দুনিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন বালুরঘাটের পাওয়ার হাউস এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক ও গল্পকার গগন ঘোষ। বই খাতা ছেড়ে নিজের লেখা গল্প কবিতা লিখলেন শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তাজুড়ে। চক সহযোগে লিখে চলেছেন তিনি আর তাকে পাশে থেকে গল্প পড়ে সাহায্য করছেন অন্য এক গল্পকার নিরুপম ভাদুড়ী। ইতিমধ্যেই বালুরঘাট হাই স্কুলের সামনের রাস্তায় ‘বোঁদে’, গার্লস কলেজের সামনের রাস্তায় ‘আত্রেয়ীর আলেয়া’ গল্প লিখেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গগনবাবু প্রায় ১১ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন বেড়ল এফপি স্কুলে। পদার্থবিদ্যায় বালুরঘাট কলেজ থেকে স্নাতক ও মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর তাঁর। পরে কলকাতার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সেকেন্ডারি স্টিল টেকনোলজিতে পড়াশোনা করেছেন তিনি। কর্মসূত্রে প্রথমে ওড়িশায় থাকলেও মাটির টানে ফিরে আসেন বালুরঘাটে। তাঁর গল্পের বইয়ের নাম ‘বুদ্ধের পা’।
এবিষয়ে গগনবাবু জানান, এখন ছেলেমেয়েরা ভীষণ ভাবে মোবাইলে আসক্ত। তারা বিভিন্ন গেম ও সোশ্যাল সাইটে ব্যস্ত রাখছে নিজেদের। এই করে ক্রমশ কবিতা বা গল্পের বই থেকে দূরে চলে যাচ্ছে তারা। তাই সাহিত্যের প্রতি তাদের আগ্রহী করতেই এই উদ্যোগ।
এই উদ্যোগে গ্রামীণ চিকিৎসক অরুনাভ মহন্ত জানান, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মোবাইল ও গেমেই মত্ত আগের মত খেলাধুলো ও সাহিত্য চর্চা এখন আর হয় না তাই গগনবাবুর এই উদ্যোগকে আমি সমর্থন জানাই। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন সাহিত্য চর্চার পথে চলে। এছাড়াও গগনবাবুর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বালুরঘাটের সকল স্তরের মানুষ।