আপনি কি বেশি ঘুমোন ! অজান্তেই ডেকে আনছেন এই রোগগুলি
কম ঘুম যেমন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর, তেমনই বেশি ঘুমও ডেকে আনে নানা রোগ ব্যাধি। জেনে নিন বেশি ঘুমে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে কি কি রোগ।
Bengal Live ডেস্কঃ আমাদের সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে শরীরে শক্তির যোগান দেয় ঘুম। চিকিৎসকদের মতে, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের ‘লিভিং অরগানিজমগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। ফলে ঘুম না হলে বা কম হলে নষ্ট হতে পারে শরীরের হরমোনের ভারসাম্য, বাড়তে পারে বদহজম, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং হাইপার টেনশনের মতো সমস্যগুলি। সুতরাং সুস্থ থাকতে বিকল্প নেই নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুমের। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্লিপিং ফাউন্ডেশন সম্প্রতি তাঁদের একটি গবেষণায় বলেছে, ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সী একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট। অন্যান্য গবেষণারও মিল পাওয়া যায় এর সঙ্গে। দেখা যায়, মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য সাত ঘণ্টা ঘুমই পর্যাপ্ত। এবং এর চেয়ে অতিরিক্ত ঘুম শরীরের জন্য ক্ষতিকর, প্রয়োজনের বেশি ঘুম ডেকে আনতে পারে নানাবিধ অসুস্থতা। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলি কি কি –
স্থূলতাঃ বর্তমানে এটি একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা। বেশি ঘুমালে শরীরের কোনও মুভমেন্ট হয় না ফলে ক্যালোরিও বার্ন হয় না। যার ফলে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমে, দেখা দেয় স্থূলতার সমস্যা।
কয়েকশো বছর ধরে কাঠের চৌকি ছেড়ে মাটিতেই ঘুমোন পীরপালবাসী, কিন্তু কেন ?
পিঠে ব্যথাঃ দীর্ঘ সময় ধরে ভুল পজিশনে বা খারাপ মানের গদিতে ঘুমোলে পিঠের পেশীগুলির উপর চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে দীর্ঘক্ষণ ঘুমানোর ফলে পিঠে ব্যথা হতে পারে।
মাথাব্যথাঃ আমাদের ঘুম ও জাগার ধরন নিয়ন্ত্রণ করে সেরোটোনিন হরমোন। অতিরিক্ত ঘুম সেরোটোনিনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং নিউরোট্রান্সমিটারকে বাধা দেয়। ফলে, অনেকেরই সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার পরে মাথাব্যথা করে থাকে।
অতিরিক্ত ক্লান্তিঃ কখনো কখনো দীর্ঘক্ষণ ঘুমানোর পরেও শরীরে ক্লান্তি অনুভূত হয়। এটি কিন্তু হতে পারে বেশি ঘুমানোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। বডি ক্লককে ব্যাহত করে অত্যধিক ঘুম যা প্রভাবিত করে পুরো শরীরকে । অতিরিক্ত বিশ্রামের কারণে শক্ত হয়ে যায় পেশী ও স্নায়ু এবং শারীরিক ধকল নিতে সমস্যা হয়। ফলে শরীরে ভীষণ ক্লান্তি অনুভব হয়।
দুই পা বাঁধা সাইকেলে, রাস্তা দিয়ে টেনেহিঁচড়ে কুকুরকে নিয়ে গেল যুবক,অভিযোগ রায়গঞ্জে
ডায়াবিটিসঃ মানব দেহের হরমোনের উপরও প্রভাব রয়েছে অতিরিক্ত ঘুমের। বিশেষত ই এর দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয় ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনগুলো। বেশি ঘুমের ফলে ক্লান্ত বোধ করলে শরীরের শক্তি কমে আসে , ফলে সাধারণত জাঙ্ক ফুড বা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে মানুষ । আর এইসব কারণে, রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
দুর্বল মস্তিষ্কঃ খুব বেশি ঘুম চিন্তাশক্তিকে দুর্বল করে দেয়৷ ফলে কোনো কিছু মনে রাখতে না পারা, মাঝে মধ্যেই ভুলে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দেয়। সবচেয়ে বড় বিপত্তি হল মনোযোগের অভাব দেখা দেয়, যার ফলে কর্মক্ষেত্রে প্রভূত অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয়।
ডিপ্রেশনঃ অতিরিক্ত ঘুম ডিপ্রেশনের সঙ্গেও সম্পর্কিত। স্লিপিং সাইকেল এলোমেলো হয়ে গেলে সৃষ্টি করতে পারে উৎকণ্ঠা এবং মানসিক চাপের অনুভূতি। খুব বেশি ঘুম হতে পারে হতাশার লক্ষণ, যা দীর্ঘ সময় ধরে ঘুমিয়ে আরও খারাপের দিকে যায়।
আজও রায়গঞ্জের দাস বাড়িতে গ্রামোফোন চলে, রেকর্ড বাজে
মহিলাদের ফার্টিলিটির উপর কুপ্রভাবঃ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশি ঘুমানো হরমোন এবং বডি ক্লককে প্রভাবিত করে, যা সন্তান ধারণ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। মহিলাদের ফার্টিলিটির উপরও বেশি ঘুমানোর প্রভাব পড়ে। একটি কোরিয়ান গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন থেরাপিতে থাকা সেইসব মহিলাদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি যারা সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমান । এবং যারা ৬ ঘণ্টা বা তার কম ঘুমোন তাঁরা ৪৬% এবং যাঁরা নয় থেকে এগারো ঘন্টা ঘুমোন তাঁধের মধ্যে ফার্টিলির সন্তান ধারণের সম্ভাবনা থাকে ৪৩%।