ওজন কমানো থেকে ত্বকের জেল্লা, জেনে নিন টমেটোর উপকারিতা
টমেটো একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর সবজি। গুণে ভরপুর টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি ও খনিজ পদার্থ। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ নিরাময় ও ত্বকের যত্নে সহায়তা করে।
Bengal Live স্পেশালঃ পুষ্টিতে ভরপুর টমেটোতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, কে, ফলেট এবং পটাসিয়াম, থায়ামিন, ভিটামিন বি৬ এবং কপার সহ আরও অনেক রাসায়নিক পদার্থ। এছাড়াও এক কাপ টমেটোর মধ্যে থাকে দুই গ্রামের মতো ফাইবার ও অনেক পরিমাণ জল।
গুণাগুণঃ
চর্মরোগের জন্য টমেটো অত্যন্ত কার্যকর উপাদান। ত্বকে যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে, তবে প্রক্রিয়াজাত করে টমেটোর ব্যবহার করতে পারেন। চর্মরোগ নিরাময়ে এর রস কাজ করে থাকে।
টমেটো খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি বা দুটি টমেটো খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
কুড়িটি গাছেই কোটিপতি, পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান গাছটি জন্মায় ভারতের মাটিতেই
রক্তস্বল্পতা দূরীকরণে সাহায্য করে। যাঁরা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য টমেটো বেশ উপকারী। প্রতিদিন
এক থেকে দুইবার টমেটো খেলে রক্তস্বল্পতার সমস্যা অনেকটাই দূর হতে পারে।
সর্দি-কাশি প্রতিরোধেও টমেটো বেশ কার্যকর। এক বা দুটি টমেটো নিয়ে অল্প চিনি বা অল্প লবণ দিয়ে পাত্রে গরম করে স্যুপ তৈরি করে খেতে পারেন। এর ফলে সর্দি-কাশি নিরাময় হয়।
মাড়ির রক্তপাত নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ভিটামিন সির অভাবে মাড়ি থেকে যদি রক্তপাত হয়। টমেটোতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। তাই প্রতিদিন একটি করে টমেটো খেলে মাড়ি এবিষয়ে উপকার পাবেন।
বিটা-ক্যারোটিন ও লাইকোপেনে সমৃদ্ধ টমেটো চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। টমেটো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
লবঙ্গঃ ব্রণ সারায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে, ঘরোয়া টোটকার হদিস রান্নাঘরে
ওজন কমানোর উপকরণ হিসাবে টমেটো তুলনাহীন। টমেটোর রস পানের মাধ্যমে শরীরের মেদ কমানো সম্ভব।
টমেটোতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লাইকপেনে যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, চোখ ও ত্বকের সুরক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
গবেষণায় দেখা যায়, লাইকোপেনে প্রাকৃতিকভাবে মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এছাড়া টমেটোর রসে ক্যালরির পরিমান খুব কমএর ফলে শরীরের মেদ ঝরে ওজন দ্রুত কমে।
গবেষকদের মতে, টমেটো শরীরে কারনিটাইন নামক একটি অ্যামাইনো এসিড তৈরি করে যা শরীরের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে এবং বয়সের ছাপ দূর করতে টমেটো বেশ কার্যকর। এর রস মুখের ত্বক মসৃণ ও কোমল করে। নিয়মিত টমেটো খেলে ত্বক সুস্থ থাকে। ত্বক হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত। টমেটো সূর্যের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করে ত্বকে বলিরেখা পড়ার পরিমাণ কমায়।
ইলিশ পোলাওঃ রসিক বাঙালির জিভে জল আনা ভোজন
টমেটোর মধ্যে রয়েছে লাইকোপেন এবং ভিটামিন এ। যা অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাই নিয়মিত টমেটো খেতে পারেন।
এর মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম। যা হাড়ের জন্য অনেক উপকার। আপনার হাড় দুর্বল থাকে তবে টমেটো খেতে পারেন।
সতর্কতাঃ
টমেটোতে ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড আছে, যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড বা অম্লের প্রবাহ তৈরি করতে পারে। তাই বেশি টমেটো খেলে পেটে গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড বেশি হয়ে হজমে গন্ডগোল হয়। যাঁরা প্রায়ই পেটের সমস্যায় ভোগেন, তাদের অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত।
অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর দেখা দিতে পারে। টমেটোতে থাকা ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট মাত্রা শরীরে বেড়ে গেলে তা সহজে দূর হয় না। তা শরীরে জমে কিডনিতে পাথর তৈরি করতে শুরু করে।
ইলিশের অনেক পদই তো রেঁধেছেন, ঢাকাই ভুনা ইলিশ খেয়েছেন ? শিখে নিন রান্না
অতিরিক্ত টমেটো খেলে গেঁটে বাত দেখা দিতে পারে।কারণ, এতে সোলানিন নামে বিশেষ অ্যালকালয়েড থাকে। এ যৌগ বিভিন্ন কোষে ক্যালসিয়াম তৈরি করে এ যৌগের পরিমাণ বেড়ে গেলে গেঁটে বাতের মতো রোগের দেখা দেয়।
টমেটোতে লাইকোপেন আছে। এটি প্রোস্টেট ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার রোধে সাহায্য করে। এটি অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ৩১ শতাংশ কমাতে পারে। তবে অতিরিক্ত লাইকোপেন থেকে লাইকোপিনোডার্মিয়া নামের একধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ফলে ত্বকের রং বদলাতে শুরু করে। অতিরিক্ত পরিমাণে সব খাদ্যই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। সামঞ্জস্য বজায় রেখে খাদ্য গ্রহণ করলেই তা কার্যকরী হবে।