Nblive পোর্টজিনঃ
পরীক্ষা
– শুভ্র মৈত্র
সার সার মুখগুলিতে উদ্বেগ আর ভয়ের জ্যামিতি। সামনে প্রশ্নপত্র, খাতা, পরীক্ষা চলছে। একজোড়া চোখ পাহারায়। ঘাড় ঘোরানো বারণ। নিষেধ কথা বলা।
এমনই ছিল শীতচলনে পরীক্ষাবেলা। ক্রিকেট-কমলা শীতসঙ্গ ছেড়েছে আগেই। চলে গিয়েও ফিরে এসেছে অ্যানুয়াল। সেই দইয়ের ফোঁটা আর পিচবোর্ডকে সঙ্গে করে। ভয় পাওয়া মুখগুলি যেন চিরায়ত।
এই মেদুর শীতেও কপালে বিনবিনে ঘাম। প্রশ্নপত্রে শুয়ে আছে হাড়হিম উপপাদ্য। আনমনা রচনা আর খেয়ালি সালোকসংশ্লেষকে সঙ্গে নিয়ে। এখানে অনুমতি ছাড়া জল খাওয়া যায় না।
পাশের ছেলেটি যে আমার থেকে অনেক বেশী জানে, তা তো পরীক্ষা হলেই শেখা। পাশের সিটে বসা। পাশের বাড়িতে থাকা। সে জানে অনেক বেশী, অনেক নির্ভুল সে।
এখন তুই একা। বান্ধবহীন। প্রশ্ন ধেয়ে আসে তোর দিকেই। নিরাভরণ। উত্তর চাই সঠিক, পছন্দসই।
খাতায় মুখ গুঁজে তুই খেয়াল করিসনি। দেয়াল ভেঙ্গেছে কখন। পরীক্ষা চলছে অহর্নিশ, ভিড় করেছে চোখগুলি। আর পরীক্ষার্থী একা। বেয়াড়া প্রশ্নের সংখ্যা বাড়ছে ক্রমশ।
অবিরাম প্রশ্ন আর মনমতো উত্তরের চাপে মরিয়া তুই হঠাৎ যদি আসন বদলাস? নিজেই যদি হয়ে যাস পরীক্ষক! দেখবি, কেমন বিভ্রান্ত দেখাবে পরীক্ষকের ভূমিকায় অভ্যস্ত শাসককে। সে যে পরীক্ষা দিতে ভুলে গেছে!
আগুন ছড়ায় সংক্রমণে
আমার কেবল শীতলপাটির সুখ
লক্ষ্যভেদে ঈর্ষা মাখা তির
শান্ত বিকেল বৃষ্টি অভিমুখ।
আবীর আকাশ ভোরের গন্ধে
ভৈরবীতে মনখারাপের গান
আগুন খুঁজি শীত বিদায়ের কাল
ডাকবি তুই? পাতবো এবার কান।
শরীর পোড়ে বসন্ত উৎসবে
পলাশ রঙে ডাকপিয়নের সুর
তোর চোখে আজ শিমূল অভিসার
তোর হাসিতেই আগুন সমুদ্দুর।